বিকেলে বাবার কবরে তাজিনের দাফন
ছোট
পর্দার অভিনেত্রী, সদা হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণবন্ত তাজিন আহমেদ হঠাৎ করে না
ফেরার দেশে চলে গেলেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর উত্তরার
রিজেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
সন্ধ্যায়
উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের একটি মসজিদে গোসল শেষে তাজিনের মরদেহ উত্তরার ১১
নম্বর সেক্টরের রিজেন্ট হাসপাতালে রাখা হয়। সেখান থেকে রাত ১০টায়
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের হিমঘরে নিয়ে যাওয়া হয় তার মরদেহ।
বুধবার
সকাল সাড়ে ১০টায় উত্তরার আনন্দ বাড়ি শুটিং স্পটে রাখা হয় তাজিন আহমেদের
মরদেহ। সেখানে তার সহকর্মী ও শোবিজ অঙ্গনের অনেকেই তাকে শেষ বারের মতো
দেখতে আসেন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত মরদেহ এখানেই রাখা হবে। এরপর বাদ জোহর
গুলশানের আজাদ মসজিদে জানাজার পর রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তার বাবার কবরে
তাকে দাফন করা হবে।
মঙ্গলবার
বিকেল সোয়া ৩টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে ভর্তি
করা হয়। অবস্থা গুরুতর বলে তখনই তাকে নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। বিকেল ৪টা
২০ মিনিট নাগাদ কর্তব্যরত চিকিৎসক নূর হোসেন তাজিন আহমেদকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসকরা জানান, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
১৯৭৫
সালের ৩০ জুলাই নোয়াখালীতে জন্ম নেন ক্ষণজন্মা এই অভিনেত্রী। জন্ম
নোয়াখালীতে হলেও তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে পাবনা জেলায়। ১৯৯৬ সালে দিলারা
জলি রচিত ও শেখ নিয়ামত আলী পরিচালিত 'শেষ দেখা শেষ নয়' নাটকের মধ্য দিয়ে
তার অভিনয় জীবনের শুরু। নাটকটি বিটিভিতে প্রচার হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়াশোনা করেছিলেন এই অভিনেত্রী।
তাজিন
আহমেদ ভোরের কাগজ, প্রথম আলোসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছেন। আনন্দ
ভুবন ম্যাগাজিনের কলামিস্টও ছিলেন তিনি। পরে মার্কেন্টাইল ব্যাংকে পাবলিক
রিলেশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। 'নাট্যজন' নাটকদলের হয়ে তিনি
মঞ্চে কাজ করেছেন। পরে ২০০০ সালে 'আরণ্যক' নাট্যদলে যোগ দিয়েছিলেন এই
অভিনেত্রী। গত বছরের অক্টোবরে আরণ্যকের 'পস্প ও মঙ্গল' নাট্যোৎসবে 'ময়ূর
সিংহাসন' নাটকে বলাকা চরিত্রে অভিনয় করেন।
তবে টিভি নাটকে অভিনয় করে দর্শকের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। তার সর্বশেষ ধারাবাহিক নাটক 'বিদেশি পড়ি'।
তাজিন
রেডিও এবং টেলিভিশনে উপস্থাপনাও করেছেন। তিনি লেখালেখিও করতেন। তার লেখা ও
পরিচালনায় নির্মিত হয়েছিল 'যাতক' ও 'যোগফল' নামে দুটি নাটক। তার লেখা
উলেল্গখযোগ্য নাটকগুলো হচ্ছে 'বৃদ্ধাশ্রম', 'অনুর একদিন', 'এক আকাশের
তারা', 'হুম', 'সম্পর্ক' প্রভৃতি।
রাজনীতিতেও
যোগ দিয়েছিলেন তাজিন। ববি হাজ্জাজের রাজনৈতিক সংগঠন 'বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী
গণতান্ত্রিক আন্দোলনে' (এনডিএম) যোগ দিয়েছিলেন তিনি। দলটির কেন্দ্রীয়
কমিটির বিভাগীয় সম্পাদক (সাংস্কৃতিক) পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
No comments